মুহাম্মদ দিদার হোসাইন, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
স্বামীর অকাল মৃত্যুতে ধ্বস নেমে আসে আলিফার জীবনে, তবুও হার মানতে মোটেও রাজি নন সেই বিধবা আলিফা, অভাবের সংসারের চাকা সচল রাখতে অটোরিকশা নিয়ে বাঁশখালীর সড়কে এই নারী।
বিধবা আলিফা চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের প্রেমবাজার এলাকার মৃত বাহাদুরের মেয়ে বলে জানা গেছে।
অভারের সংসারের খরচ যোগানোর মতো কেউ নেই, তাই জীবনের ইতি টেনে দুই মেয়ের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পড়ালেখার খরচ ও বৃদ্ধা মায়ের ঔষধপত্র এবং পরিবারের অভাব মেটাতে অটোরিকশা নিয়ে সড়কে নামলো এই বিধবা নারী।
বিয়ের কয়েক বছর যেতে না যেতেই স্বামীর অকাল মৃত্যুতেই বন্ধ হয়ে যায় সংসারের ইনকামের চাকা। এতে বেড়ে যায় অভাব অনটন।
অকালে স্বামীকে হারানোর পর দ্বিতীয় কোন সংসারের চিন্তা না করেই বাবা হারা দুই মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে এই অভাবের সংসারের সব দায়িত্বভার কাঁধে নিলেন আলিফা।তীব্র তাপদাহের মাঝে সবাই যখন অতিষ্ঠ, ঠিক সেই সময়েও থেমে নেই আলিফা। কষ্টের সংসারের খরচ যোগাতে অটোরিকশা নিয়ে সড়কে নামলেও তাঁর চেহেরাতে কোনো ধরনের পেরেশানি পরিলক্ষিত হয়নি।
অবিচল আস্থার সাথে দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় সংসারের সব দায়িত্ব কাঁধে নিতে রাজি হলেও হার মানতে মোটেও রাজি নন আলিফা। তাঁর এমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞা যেনো অভাক করে দিয়েছে সাধারণ মহলকে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে আলিফার যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা তা কেবল তাঁর সংসারের জন্য নয় বরং কর্ম অবহেলিত বেকার সময় যাপনকারীদের কর্মমুখী করতেও সহায়ক হবে।
আলিফা জানান,বিয়ের কয়েক বছর যেতে না যেতেই অকালে স্বামী মৃত্যু বরণ করেছে। মহান আল্লাহর এমন সিদ্ধান্তকে ধৈর্য্যের সাথে মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিলোনা। তাই
নিজের জীবনের চিন্তা বাদ দিয়ে আমার দুই মেয়ের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে তাদের পড়াশোনা, ভরনপোষণ ও বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্বভার কাঁধে নিয়ে আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে অটোরিকশা নিয়ে সড়কে নেমেছি। আর আমি নারী হলেও সড়কে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ ও অন্যান্য অটোরিকশা চালকরা আমাকে সম্মান ও সহযোগিতা করে থাকেন।
কপালের লেখাতো খন্ডন করা যায়না, হয়তো এটাই ছিলো আমার কপালে লেখা। তাই কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান আলিফা।
Leave a Reply