মুহাম্মদ দিদার হোসাইন, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
ঘূর্ণিঝড় “রিমাল” পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠায় উত্তাল বঙ্গোপসাগর, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকাজুড়ে বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে চলে যেতে মাইকিং করে ব্যস্ত সময় পার করছে উপজেলা প্রশাসন ও সি পি পি টিম সদস্যরা।
২৬ মে (রবিবার) উপজেলার ছনুয়া, শেখেরখীল, গণ্ডামারা, বাহারচড়া, খানখানাবাদ, প্রেমাশিয়াসহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ওইসব এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করা হচ্ছে।
সি পি পির বাহারচড়া টিম লিডার মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, আবহাওয়া অফিস যখন ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জানিয়েছে তখন থেকেই আমরা মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করে যাচ্ছি। এখনো মাইকিং করা হচ্ছে।
বাহারচড়া ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ইউনুস ও খানখানাবাদ ইউপি জসিম উদ্দিন হায়দার এবং শেখেরখীল ইউপি চেয়ারম্যান মওলানা মোর্শেদুল ইসলাম ফারুকী বলেন, ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশ মোতাবেক উপকূলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে সরিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছি, এরই মধ্যে অনেকেই তাঁদের প্রয়োজনীয় মালামাল, গরু, ছাগল ও গৃহ পালিত পশু নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গেছেন। ঘূর্ণিঝড় রেমাল পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বা পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত সবাইকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে সতর্ক করে যাচ্ছি।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘর ছেড়ে অনেককেই পাটি-বালিশ, কম্বলসহ বাচ্চাদের নিয়ে চলে যেতে দেখা গেছো। তবে উপকূলের মানুষের দাবি, প্রতিবছরই বর্ষার মৌসুম আসলেই ঘূর্ণিঝড় আতংকে ঘর বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় ঘূর্ণিঝড় আতংকে থাকতে হয় উপকূলের মানুষকে। জোয়ারের পানি বাড়লেই বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় এলাকার মানুষ। এসময় কতৃপক্ষের কাছে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানান উপকূলবাসী। বাহারচড়া উপকূলের মানুষের খোঁজখবর নিতে আসেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মওলানা ওসমান গণী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানান, গতকাল থেকে বাঁশখালীতে মাইকিং করা হচ্ছে, এতে সি পি পি টিম সদস্যরাও মাইকিং করে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা যার যার এলাকার উপকূলে বসবাসরত মানুষ গুলোকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেন। বাঁশখালীতে সর্বমোট ১১০ টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে, ওইসব আশ্রয় কেন্দ্র গুলো খোলা রাখা হয়েছে যাতে মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিস টিম, মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আর আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে যারা আশ্রয় গ্রহণকারীদের জন্যে শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যখন প্রয়োজন হবে সাথে সাথেই আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান ইউএনও জেসমিন।
Leave a Reply