দিদার হোসাইন,স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার মহোৎসবে মেতে উঠেছে সাধনপুরের ৪নং ওয়ার্ড এলাকার একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র,এতে ধ্বংসের মুখে পড়ছে পরিবেশ,এমন অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাণীগ্রাম নোয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে কচুজুম গ্রামের নতুন শীল পাড়া এলাকায় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র সদস্যরা দেঁদারসে পাহাড় কেটে লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করে পরিবেশ ধ্বংস করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।শনিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায় স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্রের পাহাড় কাটার দৃশ্য।
পরিদর্শনকালে ইউপি সদস্য মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন,আমার নির্বাচনী এলাকার নতুন শীল পাড়া এলাকায় পাহাড় কেটে বিভিন্ন এলাকায় মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা অবৈধ উপার্জন করছে স্থানীয় জেয়াবুল,সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন ও নুরুল আবছার কোম্পানি সহ একটি প্রভাবশালী পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট চক্র।তারা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু স্থানীয় জনসাধারণ ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলতে সাহস পাচ্ছেনা।আমি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে সতর্ক করার পরেও কোন ধরনের তোয়াক্কা না করেই নির্বিঘ্নে পাহাড় কেটে এই বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে অভিযুক্তরা।
তিনি আরো বলেন,বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদুজ্জমান চৌধুরী ও সহকারী কমিশনার ভূমি মাহমুদুল হাসান স্যারকে জানিয়েছি এবং মাটি কাটার ছবি ও ভিডিও চিত্র দিয়েছি,তাঁরা পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্ত করেছে বলে জানান ইউপি সদস্য দেলোয়ার।
এসময় দেলোয়ার আরো বলেন,সাবেক ডিবি কর্মকর্তা হাসান মনছুর ও মোঃ আজিম নামের দুই জন লোক ওই সিন্ডিকেট চক্রের সাথে জড়িত।তারা প্রতি গাড়ি মাটিতে ৫০ টাকা করে চাঁদা নেন।আর প্রশাসনের লোকজন কখন আসতেছে তা সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে ওই পঞ্চাশ টাকার বিনিময়ে সিন্ডিকেট চক্রকে সহযোগীতা করে থাকে হাসান মনছুর ও আজিম।প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত এবং বিকেল পাঁচটার পর থেকে রাত ১০/১১ টা পর্যন্ত মাটি কাটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ,নতুন শীল পাড়া এলাকার শুধু একটি পাহাড় কাটছে তা নয় বরং তারা বেশ কয়েকটি পাহাড়ের মাটি কেটে অনেক পাহাড় দেউলিয়া করে দিয়েছে অভিযুক্তরা।অভিযুক্তদের সাথে স্থানীয় আরো বড় বড় লাঘব বোয়ালদের সম্পৃক্ততা আছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
এবিষয়ে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, সাধনপুরের ৪ নং ওয়ার্ডের নতুন শীল পাড়া এলাকায় পাহাড় কাটার বিষয়টি স্থানীয় সুত্রে জানতে পেরেছি,প্রশাসনের নজর এড়াতে পাহাড় খেকো চক্র অনেক সময় রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে যায় এমন তথ্যও আছে,তাই এই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে কথা বলেছি,তারাও এই ব্যাপারে প্রশাসনকে মাটি কাটার সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে আন্তরিক।খুব শিগগিরী ওই সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এসময় তিনি আরো জানান,অভিযুক্ত এলাকাটি চাঁদপুর বেলগাঁও চা-বাগান কতৃপক্ষের কাছ থেকে স্থানীয় কিছু লোক ইজারা নিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি,তাই এ বিষয়ে চা-বাগান প্রজেক্ট ব্যবস্থাপক আবুল বাশার এর সাথেও কথা বলছেন বলেও জানান এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান।
চাঁদপুর বেলগাঁও চা-বাগান এর ব্যবস্থাপক আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,এই বিষয়ে এসিল্যান্ড আমাকে ফোন দিয়েছে আমি বিষয়টি না দেখে কিছু বলতে পারছিনা বলে জানিয়েছি।তবে চা-বাগান কতৃপক্ষতো এই ধরনের কোন লিস্ট দিতে পারেনা,কিন্তু কেন এই কথা বলছে তাতো বুঝতে পারছিনা।তবুও বিষয়টি তিনি খবর নিয়ে দেখবে জানান ব্যবস্থাপক আবুল বাশার।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদুজ্জমান চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি শুনেছি,এবিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সাথে কথা হয়েছে,অতিশীঘ্রই পাহাড় কাটার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।এই ব্যাপারে প্রশাসন কঠোর নজরদারিতে আছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply