স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন আড়াল করে আনোয়ারা হতে বদলী হওয়া সেই ষ্টোর কিপার মনছুরুল সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ষ্টোর কিপার ভান্ডার (রক্ষক) পদে যোগদানের কয়েকদিনের ব্যবধানে অন্যত্রে বদলী তদবিরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দৌঁড়ঝাপে ব্যস্ত মর্মে অভিযোগ উঠেছে।
দৈনিক সবুজ বাংলা ডেস্কঃ
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক ষ্টোর কিপার মো. মনছুরুল ইসলাম চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ষ্টোর কিপার (ভান্ডার রক্ষক) পদে বদলী ও কর্মেযোগদানের মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলীর তদবিরে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ঘুর ঘুর করছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের আনোয়ারা শোলকাটা এলাকার মোঃ মনছুরুল ইসলাম তার নিজ এলাকা আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ষ্টোর কিপার (ভান্ডার রক্ষক) হিসেবে কর্মরত ছিলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ষ্টোর কিপার ভান্ডার (রক্ষক) পদে দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চট্টগ্রাম কর্তৃক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বদলীর আদেশ অমান্য, হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি এবং হাসপাতালে অবৈধ ভাবে প্রভাব বিস্তারসহ নানাবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্মারক নং-সিএসসি/শা-৬/তদন্ত কমিটি/২০২৪/১৯৩৬ তারিখঃ ০২ জুন ২০২৪ইং মূলে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরীকে প্রধান করে ০৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত ৩ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি কয়েক ধাপে তদন্ত পূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন প্রাক্তন সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম’র নিকট দাখিল করা হলে গত ৮ আগস্ট ২৪ ইং তারিখে প্রাক্তন সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী স্বাক্ষরিত সিএসসি/শা-৬/২০২৪/২৬২৫ মূলে প্রশাসনিক কারণে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হইতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলীর আদেশ প্রদান করে ০৩ কর্মদিবসের মধ্যে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। বর্তমানে মনছুরুল ইসলাম সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ষ্টোর কিপার ভান্ডার (রক্ষক) পদে কর্মরত আছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ষ্টোর কিপার (ভান্ডার রক্ষক) মোঃ মনছুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দূর্ণীতি ও শৃঙ্খলা অমান্য করনসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকার স্মারক নং-স্বাঃ অধিঃ/প্রশা-৩/বদলী কমিটি-৫৫০/১৯/৭০৮৩ মূলে বিগত ২০১৯ সালের ০২ অক্টোবর প্রশাসনিক কারনে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী করা হলেও উক্ত বদলীর আদেশ অমান্য করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান না করে তদবিরের মাধ্যমে বদলী ঠেকিয়ে স্বপদে বহাল থাকাসহ নানাবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বাঃ অধিঃ শৃংঙ্খলা- ১৮৪/২০২২/২৪৩১ তারিখঃ ০৬ আগষ্ট ২০২৪ইং মূলে পরিচালক (প্রশাসন) ও সহকারী পরিচালক (শৃঙ্খলা), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকার স্বাক্ষরিত সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম বরাবর পত্র প্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে আনীত অভিযোগ সমূহ প্রমানিত/ প্রমানিত নয় মর্মে সুষ্পষ্ট মতামত সহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। অভিযুক্ত মনছুরুল তার অনিয়ম ও অপরাধ ধামাচাপা দিতে ও বদলী ঠেকাতে সংযুক্তিতে কর্মরত অফিস সহকারীকে মেনেজ করে উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন আটকে দিয়েছে বলেও চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দায়িত্বশীল এক কর্মচারী সুত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দায়িত্বরত কয়েকজন কর্মচারী জানান, অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় প্রশাসনিক কারনে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী হওয়া সেই ষ্টোর কিপার মো. মনছুরুল ইসলাম বিগত ১১ আগষ্ট, ২০২৪ইং তারিখ সীতাকুন্ডে যোগদানের মাত্র কয়েক দিন যেতে না যেতেই তার নিজ উপজেলা আনোয়ারার পার্শ্ববর্তী এলাকা চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলীর জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ফরওয়ার্ডিংও গ্রহন করেন। সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী হওয়া সেই ষ্টোর কিপার কর্মস্থলে যোগদানের ৩ মাসের কম সময় চন্দনাইশে বদলীর তদবিরের খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় চলছে নানা আলোচনা- সমালোচনা।
এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যেহেতু সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে সুস্পষ্ট মতামত না আসার আগেই উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ অভিযুক্ত ষ্টোর কিপার মো. মনছুরুল ইসলামের চাহিত আবেদন মোতাবেক বদলীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করার শামিল শুধু তা নয় বরং তার চাহিত মতে আবেদনের প্রেক্ষিতে বদলীর সুযোগ দিলে তার নিজ এলাকার পার্শ্ববর্তী চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও মনছুরুল নানা অনিয়ম, দূর্নীতি ও প্রভাব বিস্তারসহ অস্থিরতা তৈরি করবে বলেও মনে করছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মচারীরা।
এই বিষয়ে জানতে সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম ডা. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও মোবাইল সংযোগ পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply